রিং পদ্ধতিতে ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার প্রস্তুত প্রণালী

 রিং পদ্ধতিতে ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার প্রস্তুত প্রণালী  ঃ











প্রয়োজনীয় উপকরণ ঃ 

কোঁচো , জৈব আবর্জনা , কোদাল , রিং স্ল্যাব/লেট্রিন তৈরির রিং ২টি, পলিথিন, চালনী ইত্যাদি। 

 প্রস্তত প্রণালীঃ 

  • জৈব আবর্জনা , খরকুটা, কলাগাছ কুচি কুচি করে কেটে তার সাথে সমপরিমাণ গোবর মিশিয়ে একটি পলিথিন দ্বারা ঢেকে ছায়াযুক্ত স্থানে ১০-১২ দিন রেখে পঁচিয়ে নিতে হবে। কেননা সরাসরি কাঁচা গোবর ব্যবহার করলে কাঁচা গোবরের  গ্যাসে কোঁচা গুলো মারা যাবে। 
  • ছায়া - শিতল স্থানে রিং স্লাব/লেট্রিন তৈরির রিং ১টি কে অপরটির উপরে  বসিয়ে দুই রিং এর মাঝখানে যে জোড়া থাকবে সেখানটাতে মাটি অথবা হালকা সিমেন্ট বালির মিশ্রণ দিয়ে জোড়া টুকু বন্ধ রাখতে হবে। নতুবা এই কোঁচো বের হয়ে যেতে পারে। এরপর ১০-১২ দিন ধরে পঁচিয়ে রাখা মিশ্রণ গুলি রিং স্লাবের ভিতরে রেখে পরিমান মত কোঁচো এর ভিতরে ছেড়ে দিব। 
  • রি এর তলায় ৩ ইঞ্চি গভীর ও ৬ ইঞ্চি চওড়া গর্ত করে সব সময় পানি দিয়ে রাখুন যাতে পিঁপড়া ও চিকা ইঁদুর লাগতে না পারে। এরা কোঁচো ও কোঁচোর ডিম খেয়ে এর বংশ বৃদ্ধি ব্যহত করে। 
  • ২-৩ দিন পর পর পরিমানমত  পানি ছিটাতে হবে। যাতে জৈব আর্বজনার মিশ্রণ গুলি  সব সময় ভেজা  ও শ্যাতশেতে থাকে।  কেননা কোঁচো সবসময় ভেজা  এবং শ্যাতশেতে জায়গায় থাকতে পছন্দ করে। মিশ্রণ গুলি শুকিয়ে গেলে কোঁচো মারা যাবে। এজন্য খেয়াল রেখে ২-৩ দিন পর পর পানি পরিমান মত পানি ছিটাতে হবে যাতে মিশ্রণ গুলি ভেজা বা শ্যাতশেতে  থাকে। 
  • এ অবস্থায় ১ হতে ২ মাস রেখে দিলে কোঁচো গুলি আর্বজনার মিশ্রণ গুলি খেয়ে  যে মল ত্যাগ করবে সেটাই হবে ভার্মি  কম্পোষ্ট  সার বা কোঁচো সার এ পরিনত হবে। 

কম্পোস্ট সার চেনার উপায় ঃ 

সাধারনতঃ আমাদের দেশে গ্রামে যে সকল কোঁচো দেখা যায় এ গুলো দ্বারা এই ভার্মী কম্পোস্ট সার উৎপাদন করা যায় না। আমাদের দেশের কোঁচো গুলোর যে মল ত্যাগ করে এগুলো দেখতে অনেকটা হোমিওপ্যাথির গোল গোল দানা ওষধের মত। কিন্তু ভার্মী কম্পোস্ট সার উৎপাদনে যে সকল কোঁচো ব্যবহার করা হয় এগুলো বিদেশী কোঁচো। থাইল্যান্ড , ভারত সহ অনেক দেশে এ সকল কোঁচো উৎপাদন করে থাকে। ভার্মী কম্পোস্ট সার উৎপাদনের কোঁচো গুলোর ত্যাগ করা মল গুলো দেখতে অনেকটা চা পাতার মত। 

কম্পোস্ট সার সংগ্রহ করা উপায় ঃ

 এ সব কোঁচো খাবার খায় এবং মল ত্যাগ করে  নিচের দিকে চলে যায় । মল গুলো রিং এর উপরে চা পাতার মত পড়ে থাকতে দেয়া যাবে। তখন এই চা পাতার মত মল গুলো সংগ্রহ করে চালুনী দিয়ে চালতে হবে। যাতে কোঁচো গুলো আলাদা হয়ে যায় এবং পরবর্তী কোঁচো আবার ব্যবহার করা যায় এবং কম্পোস্ট সার গুলো আলাদা করে সংগ্রহ করতে হবে। 

সাবধানতাঃ

ভার্মী কম্পোস্ট গর্তে জৈব পদার্থ না থাকলে, শুকিয়ে গেলে, পানি জমে থাকলে বা গরম থাকলে কোঁচো মারা যেতে পারে। এজন্য কোঁচো খাদ্য নিয়মিত সরবরাহ করতে  হবে। কম্পোস্ট রিং এর উপর একটি চালা বেঁধে দিতে হবে যাতে প্রবল বর্ষায় পানি রিং  এ প্রবেশ করতে না পারে। 

ব্যবহার বিধি ও উপকারীতা ঃ 

এই সার ব্যবহার করলে অন্য যে কোন রাসায়নিক সার ব্যবহার না করলে চলবে । কেননা এই কম্পোস্ট সারের মধ্যে সকল প্রকার রাসায়নিক সারের গুনাগুন লুকায়িত আছে। কম্পোষ্ট সার ব্যবহার করলে  জমির উর্বরতা কখনও নষ্ট হয় না। বরং আরো উর্বরতা শক্তি দিন দিন বৃদ্ধি পায় । কিন্তু রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে জমির উর্বরতা শক্তি ক্রমশঃ হ্রাস পায়। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

নাহার অর্গানিকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url