সবুজ সার পরিচিতি
যে সকল উদ্ভিদ সবুজ অবস্থায় চাষ দিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়া হয় তাকে সবুজ সার বলে ।
পোস্ট সুচীপত্র দেখে নিন
- সবুজ সার হিসেবে ধৈঞ্চা খুবই কার্যকরঃ
- ধৈঞ্চা চাষের উপকারীতাঃ
- ধৈঞ্চা চাষাবাদ পদ্ধতিঃ
- ধৈঞ্চা মাটিতে মেশানের পদ্ধতিঃ
সবুজ সার হিসেবে ধৈঞ্চা খুবই কার্যকরঃ
এ উদ্ভিদ লিগিউাম পরিবারের তাই মাটিতে রাইজোবিয়াম ব্যাকটেরিয়া সাহায্যে বায়ুমন্ডলের নাইট্রোজেনকে শিকড়ে ধরে রাখতে পারে। এই জমাকৃত নাইট্রোজেন মাটিতে যোগ হওয়ার ফলে পরবর্তী ফসলে ইউরিয়া সারের পরিমাণ কম লাগে। সম্প্রতি আমাদের দেশে দেশীয় ধৈঞ্চার পাশাপাশি আফ্রিকান ধৈঞ্চার চাষও শুরু হয়েছে। আফ্রিকান ধৈঞ্চার পাতা গাঢ় সবুজ বর্ণের , শিকড় ছাড়াও কান্ডে ৫-৬ সারি অসংখ্য নডিউল আছে। ধৈঞ্চা খুব তাড়াতাড়ি বড় হয় অপেক্ষাকৃত অনুর্বর জমিতেও চাষাবাদ সম্ভব। স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য কোন সারের প্রয়োজন হয় না। সাময়িক জলাবদ্ধতা কিংবা খরা সহ্য করার ক্ষমতা এ উদ্ভিদের রয়েছে। ধৈঞ্চা ছাড়াও শনপাট, রববটি, খেসারী, মুগ ও মাসকালাই এর পাতা সবুজ সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
আরো পড়ুন ঃ রিং পদ্ধতিতে ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার প্রস্তুত প্রণালী ।
ধৈঞ্চা চাষের উপকারীতাঃ
মাটির উর্বর হয় এবং ভৌত গুণাবলীর উন্নতি সাধন করে। গভীরমূলী হওয়ায় মাটির গভীর স্তর থেকে পুষ্টি পরিশোধণ করে মাটির উপরি ভাগে এনে দেয়, মাটিতে গাছের পুষ্টি উপাদান সমূহকে সংরক্ষণ করে এবং জমির আদ্রতা ও জোঁ অবস্থা বজায় রাখে এবং বেলে মাটির পানির ধারণ ক্ষমতা বাড়ায় , এঁটেল মাটিকে নরম করে এবং ভূমি ক্ষয় রোধ করে। জৈব পদার্থ যোগের মাধ্যমে উপকারী অনুজীবের বংশবিস্তার ও কার্যকারীতা বৃদ্ধি করে। পচনকালীন সময়ে উৎপাদিত জৈব েএসিড মাটিতে ফসফরাসের প্রাপ্যতা বাড়ায়। ৫৫-৬০ দিন বয়সের ধৈঞ্চা হেক্টর প্রতি ২৫-৩০ টন সবুজ ধৈঞ্চা উৎপাদন করে ১০০-১৫০ কেজি নাইট্রোজেন উৎপাদন করে যা ২২০-২৬০ কেজি ইউরিয়ার সমান।
ধৈঞ্চা চাষাবাদ পদ্ধতিঃ
ভালোভাবে জমি চাষাবাদের প্রয়োজন হয় না। আড়াআড়িভাবে দু’টি চাষ ও একটি মই দিয়ে
দিলেই যথেষ্ট। এপ্রিলের মাঝামাঝি অর্থাৎ বৈশাখের প্রথম দিকে অথবা মে মাসের
প্রথম অর্থাৎ বৈশাখের মাঝিমাঝি সপ্তাতে হেক্টর প্রতি ৪০-৫০ কেজি বীজ ছিটিয়ে বপন
করতে হয় । ধৈঞ্চা চাষের জন্য তেমন কোন সারের প্রয়োজন হয় না। তবে হেক্টর প্রতি
২০ কেজি টিএসপি এবং ১০ কেজি পটাশ প্রয়োগ করলে ভালো। তেমন কোন পরিচর্যার প্রয়োজন
হয় না। পোকা মাকড় ও রোগবালাই আত্রুমণ হয় না বললেই চলে। লক্ষ্য রাখতে হবে যেন
গরু -ছাগল নষ্ট না করে। বোরো-রোপা আমন শস্য বিন্যাসে বোরো ধান কাটার পরপর জমি
চাষ দিয়ে ধৈঞ্চা রোপনের সময় অথবা পরপরই যেন জমিতে পানি না জমে।
ধৈঞ্চা মাটিতে মেশানের পদ্ধতিঃ
যে জমিতে ধৈঞ্চা চাষ করা হয় সাধারণত সে জমিতেই চাষ দিয়ে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হয় । তবে এক জমিতে জমিয়ে অন্য জমিতে স্থানান্তর করা যায় । ৫৫-৬০ দিন বয়সের ধৈঞ্চা উপরিভাগ থেকে টুকরা টুকরা করে কেটে প্রথমে মই ও চাষ দিয়ে মাটিতে মিশাতে হবে। মাটিতে মিশানে সময় জমিতে ছিপছিপে পানি থাকলে ভালো। ধৈঞ্চা মাটিতে মিশানোর ৩-৪ দিনের মধ্যেই ধানের চারা রোপন করতে হয় ।
নাহার অর্গানিকের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url